মিছিলের পেছনে একদিন, ও বাঘবন্দি খেলা
১।
ছোটবেলায় আমার কবিতা ও কবিদের ভালো লাগতোনা। তারা এত আজগুবি জিনিষ লিখেন কিভাবে তা আমার ক্ষুদ্র করোটিতে আসতোনা।
সেই আমি এখন কিভাবে কিভাবে যেন কবিতা অনুরাগী হয়ে উঠেছি।
আমি জানতাম মানুষ বদলায়। রক্তাক্ত প্রান্তর-এ মুনীর চৌধুরী লিখেছিলেন,
'মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায় , কারনে-অকারনে বদলায়'
২।
উত্তরা থেকে আসছিলাম , শাহবাগে নেমে আমার মনে হল আজতো জাতীয় তেল, গ্যাস রক্ষা কমিটির হরতাল।
দু’দিন আগে জাদুঘরের সামনে একটা লিফলেট চেয়ে নিয়েছিলাম। বিলিকর্তা একটু অবাক ও খুশি হয়েছিলেন আমার আগ্রহে।
বারডেমের সামনে ওভারব্রিজের উপর দিয়ে রাস্তার ওপারে গেলাম। জাদুঘরের অপরদিকের রাস্তার ফুলের দোকানের মহিলা কর্মীরা নাস্তা সারছেন, কেউবা ব্যস্ত মালা গাথায়। কয়েকজন পুলিশ তাড়াহুড়োয় সংক্ষিপ্ত নাস্তা খেয়ে নিচ্ছেন।
তার একটু সামনে, টিএসসি অভিমুখী রাস্তার মাথায় পুলিশের কাঁটাতারের ব্যারিকেড। দায়িত্বরত বিরক্ত, ক্লান্ত-শ্রান্ত পুলিশেরা কাছাকাছি দাড়িয়ে আছেন। একটু পরপর হওয়া ‘গণ্ডগোল’-এর দিকে তাকিয়ে তাদের সতর্ক অবস্থান। কৌতূহলী আর রোমাঞ্ঝপ্রিয় বাঙালিরা চিৎকার চেঁচামেচি করছেন।
অতি উৎসাহীরা গলা বাড়িয়ে একজন অপরকে জিজ্ঞেস করছেন,
“ঐদিকে কি গণ্ডগোল হইছে নাকি?”
অতি সতর্করা দৌড়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে চলে আসছেন।
এদিকে কোন ভয় নেই; বাস, সিএনজি সবই চলছে, তবে স্বাভাবিক দিনের মত তীব্র ভিড় নেই।
ব্যাকপ্যাক ওয়ালা ভার্সিটি পড়ুয়া ধরনের কয়েকজন অবশ্য কোন অনুভুতি ছাড়াই যাওয়া আসা করছিলেন পুলিশের সামনে দিয়ে।
আমার মনে পড়ে গেল ওমর ভাইয়া একদিন বলছিলেন, উনি কলেজপড়ুয়া থাকাকালীন একদিন হেটে যাচ্ছেন, এক নেতাগোছের কেউ তাকে বলেছিল “কী ‘সরকারের’ (ইমরান এইচ সরকার) লোক নাকি? ঐদিক যাবানা।”
তাই আমি আশঙ্কা, কৌতূহল, সতর্কতা আর পরিণামদর্শী মনোভাব নিয়ে ওভারব্রিজের গোঁড়ার কাছের ফাস্টফুডের দোকানের সামনে গিয়ে বোঝার চেস্টা করছি কি হচ্ছে বা হবে বা হয়েছে।
এদিক থেকে অনেক পুলিশ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছিলনা। তবে পুলিশ দেখে অভ্যস্থ বলে কিছু মনে হয়না আজকাল।
আমার জন্য পরিস্থিতি বোঝা জরুরি ছিল কারন কার্জনে আমাদের একটা বিজ্ঞান ইভেন্ট নিয়ে মিটিং মত হওয়ার কথা।
আমি সাহস করে এগিয়ে গিয়ে বসে থাকা একজন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞেস করলাম যে এদিক হয়ে কার্জনে যাওয়া যাবে কিনা এখন?
উনি উত্তরে বললেন যে উনি নতুন এসেছেন, এখানে চিনেন না কিছুই।
আমার বেশ মায়া হল বেচারার জন্য। নতুন পোস্টিং এর প্রথমদিনটাই খারাপ যাবে তার।
এত ঝামেলা কার ভালো লাগে!
৩।
আমি আর তেমনকিছু না দেখে একটু এগুলাম।
লোকজন বলাবলি করছিল টিয়ারশেল এর কথা, ওদিকে নাকি অনেক ঝাঁঝ। দু’য়েকজন নাক চেপে ছুটে আসছে, আমার অলফ্যাক্টরি জেগে উঠছে দেখে আমিও একটু পিছনে ফিরে আগের যায়গায় এলাম।
না...নাহ! ভয় নেই।
যেভাবে বলছি আসলে এরকম কিছু ছিলনা। সবই স্বাভাবিক ছিল। সবার মধ্যে শুধু একটু আশঙ্কা নতুন কোন ঝামেলা না হয়! আমি, পুলিশ এবং তাঁরা সবাই ‘ঝামেলা’ ভয় পাই।
অবশ্য ‘তাঁরা’ ভয় নাও পেতে পারেন। আমি আসলে তাঁদের ব্যপারে নিশ্চিত নই।
যাহোক; হটাৎ আমার মনে পড়লো আহমাদ ভাইয়ার কথা। উনিতো বলেছিলেন যে উনি হরতালে যাবেন, পিকেটিং করবেন।
আমি সাথেসাথেই মনে হয় মোবাইলে পত্রিকা দেখেছিলাম, ঠিক মনে নেই। দেখলাম এই বিষয়ক দুয়েকটা খবর উপরে আছে। বুঝলাম ‘অল্প একটু ঝামেলা’ হয়েছে!
আহমাদ ভাইয়াকে ফোন দিলাম।
ভাইয়া ফোন ধরলেন, জিজ্ঞেস করলাম কোথায় আছেন। বললেন চারুকলার গেটে, উনি ওখানেই আছেন।
আমি ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করলাম আসব কিনা? নানা সাতপাঁচ ভাবছিলাম, ঠিক হবে কিনা, কতটুকু ঝুকি, এসব আরকি!
হঠাৎ আমার মস্তিস্কে একটা ঝাকুনি লাগলো। দাঁড়িয়ে ভাবতে ভাবতেই মাথায় এল হেলাল হাফিযের
“নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়”
সেই অজর লাইন-
“এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়”
নাহ! আমার পুরো কবিতা মুখস্ত নেই, কিন্তু উনসত্তরের কোন এক ক্ষনে লেখা লাইনদু’টি আমার সব ভয় ভাঙ্গিয়ে, আশঙ্কার এক চমৎকার প্রতিষেধক দিয়ে দিল।
৪।
আমি আগে কখন সত্যিকার মিছিল দেখিনি।
‘কখগ’ মালিক শ্রমিক সমিতির লম্বা মিছিল দেখেছি বটে, টিভিতেও মোটামুটি অনেক মিছিল-ই দেখেছি। কিন্তু তাকে কেউ মিছিল বলে?
যেই মিছিলে সংসারী থাকেনা, সংসার বিরাগী থাকেনা তাকে কেউ মিছিল বলে?
তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, যাই ওদিকটায়।
৫।
হাস্যকর বিষয় হল-
রামপাল পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে আলোচনা যখন শুরু হয় তখন আমি নবম কি দশম শ্রেনিতে পড়ি, নীলফামারী বিজ্ঞান মেলায় এই বিষয়ে একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করেছিলাম।
তখন অনেক ঘাটাঘাটি করেছিলাম এর বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলী নিয়ে। আমার অতি ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয়েছিল, ব্যপারটা আসলে সায়েন্টিফিক দিক থেকে যেরকম ভয়ংকর বলে প্রচার করা হচ্ছে, তেমন নয়।
গেলবছর মৃন্ময় আর শহীদুল এসপিএসবি বিজ্ঞান কংগ্রেসের জন্য এটা নিয়ে ভালোই কাজ করেছিল, ওঁরাও আমার সাথে একমত হয়েছিল যে, আসলে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র দ্বারা সুন্দরবনের ক্ষতি হবার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
পরে এ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করার প্রয়োজন মনে করিনি, এবং করিনি। যেহেতু আমি বা আমরা বিশেষজ্ঞ না, তাই সমীচীন মনে করিনি কথা বলার।
সত্যি বলতে কি, আমরা আসলে নিশ্চিত নই, কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা।
তাই রামপাল বিষয়ে সরকার এবং তাঁদের উভয়েরই কথা মনোযোগ দিয়ে আমরা শুনি এবং বিবেচনা করার চেস্টা করি।*
“রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে” এই বিষয়টা আমাদের কাছে খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি আগেও এবং এখন।
আমাদের কাছে সরাসরি সমস্যা মনে হয়েছিল এবং এখন হয় অন্যবিষয়ে! এর পিছনের ডিপ্লোম্যাটিক রাজনীতির ভিতরের ব্যপার মোটামুটি ওপেন সিক্রেট।
ভারতের সাথে কূটনৈতিক মারপ্যাঁচ আমাদের আদিকালের স্বভাব।
সেই ফারাক্কা বাধ থেকে হালের তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প।
আমি ভারতকে সরাসরি দোষ দেবনা। সাম্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে তাঁদের স্ট্রাটেজিগুলো প্রশংসার যোগ্য।
সমস্যা আমাদের দেশের।
এটা রাজনৈতিক কোন ইস্যু নয়, এখানে বিরোধীদল রাস্তায় নামেনি, সরকার পতনের আন্দোলনও নয়। তবে সরকারের এই একগুয়ে মনোভাব কেন? যুদ্ধটাতো তাঁদের সাথে নয়, বরং তাঁদের একটি মতের বিরুদ্ধে!
তবে ভিন্নমতের সহজাত অধিকার কি আমরা হারিয়ে ফেলতে চলেছি? দু’দিন পর কী আমাদের প্রিয় দেশ উত্তর কোরিয়ার কাতারে চলে যাবে?
কে জানে, ইতিমধ্যেই হয়তো গেছে!
কাউকে উপহার দেয়ার জন্য যদি আরেকজনের বুকে রাবার বুলেট ছুড়তে হয়, সেই উপহার কতটুকু ভালো?
অথচ, বিষয়টির সমাধান হতে পারত চমৎকার ভাবে।
আমাদের রাজ কবি, শ্রদ্ধেয় শওকত ওসমান তনয় স্থপতি ইয়াফেস ওসমান পারতেন বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় থেকে একটা কনফারেন্স আয়োজন করতে,
হতে পারতো নাগরিক আলোচনা, গবেষণা, গণশুনানি।
কিন্তু আমরা চলে গেছি সেই এরিস্টটল এর যুগে!
তাঁরা ভুলে গেছেন,
"বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়"
রামপাল ইস্যু, সমসাময়িক রাজনীতি এবং বর্তমান সরকারকে নিয়ে গুরুগম্ভীর অনেক আলোচনা করা যাবে। তবে আজ তা করবার জন্য বসিনি।
কে সরকার, আর কে জনগণ?
৬।
ওখানে গিয়ে কবি নজরুল সৌধের সামনে আহমাদ ভাইয়ার সাথে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম।
ওনার গায়ে জাতীয় পতাকার রঙ্গের ফতুয়া আমাকে কেন জানি একটু বিষণ্ণ করে তুলল।
বেশিক্ষন বসে থাকা হয়নি। একটু পর পর টিয়ারশেল ছোড়ায় আমি পিছিয়ে গেলাম।
আমিতো আর আন্দোলন করতে আসিনি!
পুলিশ টিয়ারশেল জলকামান নিয়ে একটু আগানোর চেস্টা করতেই সবাই আগুন জ্বালায়, আগুনে একটু শ্বাস নিয়ে টিয়ার সেলের যন্ত্রনা কমতেই আবার প্রতিরোধ গড়তেই পুলিশ পিছিয়ে যায়।
ঠিক যেন বাঘবন্দি খেলা। অদ্ভুত এক খেলা!
আর ভাইয়া, কীভাবে কীভাবে যেন মূর্তির মত দাড়িয়ে থাকছেন টিয়ারশেলের ক্যানের পাশে।বাকিদের ঋগ্ধ মুখ আর অভিব্যাক্তি’র বর্ণনা দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
আমি জানিনা, এই তরুণ- তরুণীরা এই সাহস আর শক্তি কিভাবে পায়?
তাঁরা কোন মায়ের সন্তান? তাঁদের জেলে যাওয়ার ভয় নেই, ভয় নেই রাবার বুলেটে মাংস বিদীর্ণ হওয়ার?
টিয়ার শেল এর সেই জঘন্য যন্ত্রনা তাঁরা কিভাবে সহ্য করেন? তাঁদের টার্ম ফাইনাল হয়না?
বেলা একটার দিকে যখন আমি ক্ষ্যান্ত দিয়ে সোহরাওয়ারদি উদ্যান এর ভেতর দিয়ে রমনা পার্কের দিকে যাচ্ছিলাম।
বাকিরা চলে এসেছে , আমাকে মিটিঙে যেতে হবে। শিখা চিরন্তনের পাশে দেখি সারি সারি জোড়া, শীতের মিস্টি রোদে অভিসারে রত!
আচ্ছা, যারা আন্দোলন করছিল তাঁদের কী প্রেয়সী বা প্রিয়া নেই?
তাঁরা কি পারেনা জীবনটাকে এভাবে উপভোগ করতে? এত ঝামেলা করে কেন!কিসে তাঁদের আটকায়?
৭।
রমনা পার্কে গিয়ে রেস্টুরেন্টটার ফাঁকা চেয়ারে আমরা তিনজন বসলাম।
আমি ভাবলাম বাকিরা আসার আগে নিজেরা একটু আলোচনা করি ‘রামপাল ইস্যু’ নিয়ে। আমি সরকারি পক্ষ হয়ে ওঁদেরকে বিপক্ষ নিতে বললাম। গুরুগম্ভীর আলোচনা হচ্ছিল।
হটাৎ এতক্ষন পাশে বসে থাকা একজন কেতাদুরস্ত মধ্যবয়সী ভদ্রলোক এসে চেয়ার টেনে আমাদের পাশে বসলেন। বললেন, “কিছু মনে করোনা বাবারা, তোমাদের আলোচনা শুনে ভালো লাগছে, তাই একটু শুনি?”
অবাক হওয়ার পর্ব শেষে আবিষ্কার করলাম, তিনি আসলে একটি রাজনৈতিক দলের জেলা পর্যায়ের সভাপতি। সামনে সংসদ নির্বাচন করবেন।
আমাদের আগ্রহে আলোচনা সার্বিক ভাবে মোড় নিল সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে।
তার কাছে তাঁদের সময়কার ঢাবি কেন্দ্রিক রাজনীতির কথা শুনে আমরা যারপরনাই অভিভুত।
বললেন বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা।
বললেন একবার তাকে পুলিশ আটক করেছিল ছাত্রাবস্থায়।থানার ওসি একটা বাড়ি দিয়েছিলেন লাঠি দিয়ে, পরে এস.পি এসে ওসিকে বলেছিলেন
“এরা কি চোর না ডাকাত? একে আঘাত করেছো কেন?”
আরো শোনালেন, তাঁদের বন্ধুদের অনেকেই এখন বিএনপি আওয়ামীলীগ উভয় দলের শীর্ষ নেতা। এমনকি পুলিশের বড়কর্তারা আর সেই নেতারা যে একসময় প্রবল বন্ধু ছিলেন তাও উঠে এল।
বলছিলেন যে অমুক বড়কর্তা বিরোধীদলীয় বন্ধুকে বলেন, “আমার সাথে দেখা করিসনা, দেখলে চাকরি থাকবেনা,” ডাকসু নির্বাচন নিয়েও শোনালেন তার আক্ষেপ।
আমাদের সবাইকে কফি খাইয়ে চমৎকার আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি যা বললেন তা আসলে আমাকে থমকে দিল,আমার চিন্তার একটা বড় পরিবর্তন করে দিল।
উনি চেয়ারগুলো দেখিয়ে বললেন, “এইযে তোমরা শিক্ষিত ছেলেরা এখানে এসে বসলে, তোমরা না বসলে কিন্তু চেয়ারটা ফাঁকা থাকতোনা, হতে পারে খারাপ লোকেরা এসে জায়গা করে নিবে।... ...”
এবং, এটাই আসলে হচ্ছে। আমাদের ভয় করে, অনেক ভয়।
ইংরেজ শাসনের সেই জুজু আজও আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। আমাদের ঝামেলায় জড়ানোর দরকার কী? আমরা তো ভালোই আছি!
কিন্তু আমরা ভুলে যাই, নগর পুড়লে দেবালয় ও রক্ষা পায়না! আমরা যদি ঝুকি না নেই, কে নেবে?
অনুপম ভাইয়া বলেন, আজ আপনি যদি আরেকজনের বোনকে না বাঁচান, পাড়ার পুলিসের কোন ঠেকা যে আপনার বোনকে বাঁচাবে?
কী দরকার তার ঝুকি নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে বান্দরবান বদলি হওয়ার?
৮।
দাবার মত বাঘবন্দি খেলাতেও ছক কাটা ঘর থাকে। খেলার পরিভাষায় ছোট ঘুটিগুলি ছাগল আর বড়গুলি বাঘ হিসেবে চিহ্নিত।
খেলার নিয়ম হল, বাঘ সুযোগ পেলেই একটি করে ছাগল খাবে।
খেলার শুরুতে ছকে নির্ধারিত ৪টি জায়গায় ৫টি করে ছাগল রাখা হয়। আর ছাগলের মাঝে দু’টি ঘরে রাখা থাকবে দুই বাঘ। প্রথমে ছাগলকে একটি একটি করে ঘর বদল করে সতর্কতার সঙ্গে বাঘের চারি দিকে ছড়িয়ে পড়তে হয়।
অর্থাৎ প্রতিটি ছাগলের ঘরে পিছনের ঘরে যেন আরও একটি ছাগল থাকে।
তা না হলে, পাশাপাশি কোনা-কুনি, সামনা-সামনি যে কোনও দিকে বাঘ কোনও ছাগলকে টপকে পিছনের ফাঁকা জায়গায় বসে সেই ছাগলটিকে খেয়ে ফেলে।
ফলে বাঘকে বন্দি করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
প্রথম প্রথম কিছু ছাগল বাঘের পেটে গেলেও যদি সতর্কতার সঙ্গে একটির পিছনে আর একটি ছাগল বসানো যায় তাহলে আর বাঘের পেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
উল্টে ঘর বদলের সুযোগ হারিয়ে বন্দি হয়ে পড়ে বাঘ।
যদি ছাগল বাঘকে বন্দি করতে অসফল হয় তা হলে ছাগলের পরাজয় ঘটে।
অন্যথায় ছাগলের দ্বারা বন্দি হলে পরাজিত হয় বাঘ।
৯।
ওরা বলে, ‘ধরিয়ে দিন।’
আমরা ভয় পাই, আজ কিছু করলেই কিছু বললেই, কাল লাশ ভাসবে বুড়িগঙ্গায়।
আমিও আগে ভয় পেতাম।
একদিন ভাইয়া বললেন, “একটা, দু’টো, তিনটা ... ... একশটা লাশ ভাসাবে। তারপর? ... ... একদিন লাশ ভাসবেনা। একদিন তুমুল বান আসবে, বুড়িগঙ্গার পানি আবার নির্মল, কাকচক্ষু হয়ে যাবে।”
বাঘবন্দি খেলা, খুব সাবধানে খেলতে হয়।
*আমাকে এই বিষয়ে কনভিন্স করতে চাইলে , দয়া করে তথ্য-উপাত্ত, রেফারেন্স দিন।
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
ReplyDeleteতোমার ছেলে উঠলে মাগো রাত পোহাবে তবে।
একসময় রাজনীতি করতেন উকিলেরা,শিক্ষকেরা। আজ রাজনীতি ব্যাবসায়ীদের হাতে। এখন ফেসবুকে প্রোফাইলে যখন বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে পলিটিকাল ভিউতে লিখে রাখে 'I hate it''Not Interested' আমরা এই বাংলাদেশ চাই নি, তবে আমাদের রাজনীতিবিদেরা এমন বাংলাদেশই চান; যেখানে সবাই 'ঝামেলা' এড়িয়ে যাবে।
সকাল হবে, মধ্যরাত বেশিই অন্ধকার হয়। সূর্য না উঠতে দিলে সূর্যটাকে টেনে আনব, হাত পুড়ে যাক নাহয়।
সত্যিই ,এই কঠিন বাস্তবতার জাল থেকে যে কবে মুক্তি ঘটবে তা আমরা কেউই জানি না
Deleteবায়ান্ন কিংবা ঊনসত্তরে ছাত্ররাজনীতির গল্প শুনলে আমাদেরর গায়ের রোম দাড়িয়ে যায়, কই? এখন তো সেই জৌলুস নেই?
ReplyDeleteপুরোনো intellectual দের সময় হঠাৎ স্তিমিত হয়ে এসেছে ; হারিয়ে যায়নি এখনো