Ode on the Lungi ও আমার বিপ্লবি ভাই!
১।
ছোটোবেলা থেকেই আমি সঙ্গীত অনুরাগী। ফলে
পশ্চিমা ক্লাসিক সঙ্গীতজ্ঞদের কিছু নাম সম্পর্কে ধারনা ছিলো। একটু বড় হয়েই বিথোভেন, মোজারট, পুচিনি
প্রমুখ জগতখ্যাত ব্যাক্তিদের অর্কেস্ট্রো ইউটিউবে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। সুর আমাকে যেমন অবাক করতো, তেমনি অবাক করতো যিনি অর্কেস্ট্রো পরিচালনা করতেন তার হাতের
চলন। ডান থেকে বামে, উঁচু-নিচু, মুদ্রা; কী অদ্ভুত
তার ভঙ্গীমা!
কাজেই, সম্ভবত যেদিন আমি কলেজের কাঠবাদাম গাছতলায় ওঁকে প্রথম
দেখেছিলাম , আমার অবচেতন দৃষ্টি কেন যেন সেদিকে ফিরে
তাকিয়েছিল। তার মহতী হাতের সেই বৈচিত্রময় মুদ্রা, আঁকাবাঁকা
চলন আমাকে কিছুক্ষণ বিহ্বল করে রেখেছিল। তবে চেনা মুখ মৃন্ময়কে দেখে সেই
প্রলেতারিয়েত শ্রোতা সমাবেশের কাতারে থাকায় সাহস করে এগিয়ে গিয়েছিলাম।
ওঁর সাথে আমার চাক্ষুস পরিচয় এভাবেই।
এরপর ক্যাম্প থেকে শুরু করে কলেজ কিংবা
আরামবাগের রাস্তায় তার এই বিশেষ অর্কেস্ট্রো
কন্ডাক্টর ধরনের হাতের নড়াচড়া আর বক্তৃতা
দেওয়া অনেকবার দেখার সুযোগ হয়েছে।
২।
সত্যি কথাটা হল, আমি ইশতিয়াক এইচ আকিবকে অনেক আগে থেকেই
চিনতাম।
আমার তখন ফেসবুক ছিলো , তাই সায়েন্স ইশকুল, বিডীফো
সহ নানা গ্রুপে নানা সময় চোখে পড়েছিল ওঁকে। আমি আবালগোছের এই ছেলের বালখিল্যতা থেকে যারপরনাই বিরক্ত হতাম। বলছি ২০১৩, ২০১৪'র দিকের কথা।
আকিবের বাড়ি পটুয়াখালী, আমার নীলফামারী। তখন
আমার ধারনা ছিলনা- কী বিপ্লবের প্রস্তুতি চলছে দেশের দু প্রান্তে! ইনফ্যাক্ট, ঘুণে খাওয়া বুর্জোয়া এই সমাজের বিরুদ্ধে বিপ্লবে ,নাগরিক বৈদগ্ধতার উৎস সন্ধানে সে আমাদের দলের কমরেড হবে তাই বা কে জানতো!
তবে আকিব যখন নতুন কাউকে রসিয়ে রসিয়ে তার
জন্মস্থানের পরিচয় দেয়; আমার একটু আধটু সন্দেহ
হয়ঃ পটুয়াখালি ভারতের কোনো ছিটমহল কি? সেখানে বিদ্যুত ,
স্যাটেলাইট টেলিভিশন সংযোগ পৌঁছেছে?
৩।
আমার নটরডেম জীবন অতি অবশ্যই একটি গল্প বা একটি উপন্যাস কিংবা একটি মহৎ পদ্য। যার প্রতিটি শব্দ গল্পগুচ্ছে'র এক একটি ছোটগল্প ,ওডে অন দি লুঙ্গি'র মত এক একটি কবিতা দস্ত্যয়ভস্কির মত একটি একটি উপন্যাস। তবে দিনগুলো এমন ছিলোনা!
২০১৫ সালের মোটামুটি অর্ধেক সময় গেছে 'আমি কোনো একটি দিনের সঙ্গে অন্য দিনের কোনো
তফাৎ করতে পারছি কীনা, তা ভেবে।'
সেসব কথা এখানে নয়। আজ বিপ্লব আর
বিপ্লবীর কথা হবে।
৪।
কমরেড ইশতিয়াক এইচ আকিব (মার্ক্সবাদী- বিজ্ঞান) নটরডেম কলেজে দীর্ঘদিন ধরনা
দিয়েছেন একটি গণিত ক্লাব প্রতিষ্ঠার জন্য, কিন্তু বুর্জোয়া এই কলেজব্যবস্থায় তার এই স্বপ্ন অনুকল্প হিসেবেই থেকে
গিয়েছি। এতে তিনি গতকাল একটি অনারেবল ম্যানশন প্রাপ্তি হতে বিচ্যুত হয়েছেন,
অর্ধশত গণিতপ্রেমি হতাশ হয়েছেন এবং নটরডেম কলেজের বিংশতম ক্লাবটি
হয়নি।
তবে যা হয়েছে ,তার ফলাফল এই লেখনির সারবত্তা বিশেষ।
কিছুদিন সেই প্রলেতারিয়েত কাতারে উৎসাহী দর্শক হিসেবে থাকার ফলে, কমরেডের নজরে পরেছিলাম। পরবর্তী সময়ে
ভদ্রতাসুচক দু একটি বাক্য বিনিময় হতো, মাঝেমধ্যে মৃন্ময় পারস্পরিক বন্ধু হিসেবে থাকত এবং বিপ্লব নিয়ে আলোচনাও
হতো। মাঝে একবার ফুটবলও খেলেছিলাম ওঁর সাথে।
ইউএস এমব্যাসির স্টেম প্রগ্রাম, গণিত উৎসব এসব পেরিয়ে ২০১৬ সালের একটা সময়ে আকিব কিভাবে কিভাবে যেন আমার 'বন্ধু' হয়ে গেল। আরো
সঠিক করে বলতে , আমার ও মৃন্ময়ের 'বন্ধু'। আমরা একটা ত্রয়ী
হয়ে গেলাম, এবং পারস্পরিক আরো ত্রয়ী
মিলে যাকে বলে একটা 'বৃত্ত,' আমি তার
মাঝে ঢুকে গেলাম।
আমার জীবনে একটা নতুন অধ্যায় যোগ হওয়ার
কথা ছিল, কিন্তু; আদতে মৃন্ময়, আকিব আর আমি যখন শিশু কিশোর বিজ্ঞান
কংগ্রেসে অতঃপর ক্যাম্পে অংশ নিলাম, তা আসলে একটা মহাকাব্য-
ই হয়ে গেল।
আস্তে আস্তে কিছু শব্দ ,কিছু সত্তা আর কিছু চরিত্র আমার গল্প ,
কবিতা বা উপন্যাসে যোগ হতে শুরু করল।
'মুরগি সাকিব,' 'ধইঞ্চা
রাফি,''ভোগা মৃন্ময়,''ঢিলা (পরবর্তীতে
নেদারল্যান্ডিয়) আরিফ' ‘ব্যাথা আবতাহী,’ ‘ব্রিগেডিয়ার
জিম’ ইত্যাদি মহৎ ও সৃষ্টিশীল নানা নামের সাথে ভদ্রসমাজে অস্রাব্য কিছু শব্দ, বাক্য এবং বানী আমার
কর্ণকুহরে প্রতিনিয়ত বর্ষণ হতে থাকলো।
এদের প্রত্যেক জনই এক একটা ব্লগ লেখার বিষয়
হবে একদিন। একটা মহাকাব্য লেখা সহজ কথা নয়, আমার ক্ষমতাও নেই। কাজেই আস্তে আস্তে সবার
কথা লিখবো একদিন।
৫।
আকিব পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে প্রথম
হওয়া সংগ্রামী ভাই, বিডিফো ক্যাম্পার,
বুর্জোয়াদের ষড়যন্ত্রঘেরা আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা অলিম্পিয়াডের
নির্বাচিত দলে সুযোগপ্রাপ্ত, নটরডেম ব্লু এর সাবেক সদস্য, কংগ্রেসের
টানা ৩ বছর আনবিটেবল বিজেতা, এম্পেম্বা এফেক্ট নিয়ে গবেষণা
করে বিখ্যাত হওয়া গবেশক এবং সদ্য কংগ্রেসের চ্যাম্পিয়ন অফ দি চ্যাম্পিয়ন এবং ...
... এরকম শত শত বলা যাবে।
কিন্তু এগুলো কি তার পরিচয়?
না!
নোবেল ভাইয়া বলেন "আকিবের ভেতরে যাই থাক, খোলসটা যথেষ্ট সুখী একটা
ছেলের। সারাক্ষণ হাসছে, বাঁদরামো করছে, বন্ধুদের খেপিয়ে মারছে। আমার তো মাঝেমধ্যে দুশ্চিন্তাই হয়— আকিবের পচানি
খেতে খেতে বাকি ছেলেমেয়েগুলো পাগল হয়ে যায় কিনা!
ক্যাম্পের শেষ রাতে এই
ছেলেটা রাত তিনটা পর্যন্ত আর্টসেল শুনতে শুনতে এক্সপেরিমেন্ট ডিজাইন করেছে। এরপর
রাত তিনটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত সে যা করেছে, সেটা না দেখলে বোঝানো
কঠিন। হাসতে হাসতে আক্ষরিক অর্থেই একেকজন গড়াগড়ি দিয়েছি আমরা!
এবারের ক্যাম্পে
গতবারের বিশাল মাঠ, পুকুর, গাছ, মায়া
ধরানো করিডোর— কিছুই ছিল না। কাজেই ক্যাম্পের গল্পগুলোর একটা বড় অংশের জন্ম হয়েছে
সিঁড়িতে। এবং এই সিঁড়ির গল্পগুলোর আগে-পরে আকিবের কিছু বড় ভূমিকা আছে, কিন্তু এগুলো সবাইকে বলা যাবে না। কিছু কথা অবশ্যই অফ দা রেকর্ড রাখতে হবে,
হাজার হোক এটা জগদীশ বসু ক্যাম্প!"
আমি একজন পর্যবেক্ষক, বিরাট শিশু; ঠিক
নজরুলের গানের মত "খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে, বিরাট শিশু
আনমনে।" আমি সব দেখার চেস্টা করি, ক্ষুদ্র কোয়ার্ক থেকে
বাবল ইউনিভার্স নিয়ে 'দি বিগ পিকচার!'
কাজেই আমি যেদিন ওঁর খোলসের ভিতরে দেখার
সুযোগ পেয়েছিলাম, ভয়ানক অবাক হয়েছিলাম!
তবে সত্যি বলতে চমকাইনি, আমি পরিচিত এই ব্যাপারটার সাথে। আসলে অতি পরিচিত।
তবে এই পরিচিতি খুব সুখকর নয়। এবং, নির্দ্বিধায় গল্পের না দেখা ও সবচেয়ে
আকর্ষণীয় কিংবা গুরুত্বপূর্ণ অংশ!
৬।
আমাদের
কংগ্রেসের ক্যাম্প সবসময় ইতিহাস। সব কথা যায়না বলা, তারপরেও নিন্দুকেরা কেমন কেমন করে যেন আদিম আবেগ অনুভুতি গুলো
নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা ছড়ায়। আমার সম্পর্কেও নানা কথা শোনা যেত! নোবেল ভাইয়া
যথার্থই বলেছেন "আমার তো মাঝেমধ্যে দুশ্চিন্তাই হয়— আকিবের পচানি খেতে
খেতে বাকি ছেলেমেয়েগুলো পাগল হয়ে যায় কিনা!"
ক্যাম্পের পরে আমরা অবশেষে অনেক
চেস্টা-চরিত করে ওঁর দুর্বল যায়গাটা আবিষ্কার করে ফেললাম।
আরিশা(ছদ্মনাম)'র খোঁজ এর জন্য আপুকে হয়তো ধন্যবাদ দেওয়া
যেতে পারে। যাহোক, সম্ভবত করুণাময় আমার জন্যই এরপরে অনেক অনেক গল্প লেখার উপাদান তৈরি করে
দিলেন।
৭।
আমার বাঁশি খুব ভালো লাগে। মাঝখানে বাঁশি
এবং অকৃতিম আবেগ দুটোই নির্বাসনে ছিলো। অনেকদিন পরে, শখ করে একটা বাঁশি কেনা হয়েছে। সারাদিন
হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াই।
গত মাসের ৮ ডিসেম্বর সায়েন্স ক্লাবের কি
একটা প্রোগ্রাম ছিল। আর কিছু একটা কাজও হয়তো ছিল কলেজে।
তখন শীত জাঁকিয়ে বসেনি, হেমন্তের ন্যায় হিমেল হাওয়া বইছিল সেদিন। ইংরেজি "কোল্ড
ব্রীজ" ধরনের বাতাস নটরডেমের স্বর্গীয় পরিবেশটাকে সেদিন একটু বেশী
রোমান্টিসিজমে আচ্ছন্ন করেছিল।
বড্ড
প্রিয় একটা সময়। খানিকটা ভালবাসার উষ্ণতা, হিমেল বাতাস, এক কাপ
গরম চা, একটু হাঁটাহাঁটি এরকম কাজগুলোর জন্য সেরা সময়। তবে
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নাকি ব্যাতিক্রম কে জানে, অনেকটা ঝড় আসবে আসবে ভাব
ছিল। কালবৈশাখীর মত, শীতে পাতা ঝরানো গাছগুলোর একটা, দুটো আর মাঝেমাঝে দলে দলে পাতা উড়ে উড়ে
পড়ছে,বাতাসে চুল উড়ছে, অদ্ভুত এক
অনুভুতি। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলা যায় "হৃদয়-এ বাজিলো সুখের ব্যাথা।"
সমস্যা একটাই, আমার কপালে এই সুখের ব্যাথা
অনুভবের কথা লেখা ছিলনা।
লেখা ছিল আকিবের কপালে।
আরিশা এসেছে প্রগ্রামে , আর আমি আর আকিব বকুলতলার শান
বাধানো অংশটায় বসে আছি, আমার হাত থেকে বাঁশিটা নিয়ে সে প্রবল
আকুতি নিয়ে বাজানোর চেস্টা করছে, ফুউউউ এর এই প্রচেস্টা
প্রলেতারিয়েত আঁকিব'দের জন্য যেহেতু নয়, তাই বাঁশি থেকে মিউ মিউ জাতীয় শব্দ হচ্ছিল। কিন্তু আকিবের চেস্টা আর
উতসাহের কোনো কমতি ছিলনা।
আরিশা অডিটরিয়ামের ভিতরে, আকিবের মনে ঝড় আর একটু সুখের
ব্যাথা বইছে, আর আমি মিটিমিটি হাঁসি। ততক্ষনে আমাদের কোয়ান্টাম স্ট্যাটিস্টিক্যাল
থারমোডিনামিক্স এর উপর একটা শর্ট কোর্স ও করা হয়ে গেছে।
একসময় প্রগ্রাম শেষ হল, আরিশা বের হল।
আমি চমকে উঠালাম, যেন টাইম ট্রাভেল করলাম।
রোমান হলিডে মুভির শেষে গলা দিয়ে যেমন একটা বিষাদের ঢোক গেলার মত অনুভুতি হয়
অনেকটা এরকম।
আমার মনে হল, যেন দি পার্কস অফ বিয়িং আ
ওয়ালফ্লাওয়ার এর মত কোনো মুভি দেখছি , এই হিমেল হাওয়া আর
পরিবেশে আকিব তারপরেও চেস্টা করছে প্যাঁ পোঁ করার। মেয়েটা আরচোখে ওঁর দিকে
তাকাচ্ছে, আমরা পিছে পিছে যাচ্ছি। কলেজ গেট পেরিয়ে ডালাসের
গলি পর্যন্ত এই নাটক পুরোদমে চললো, আরিশার সাথে ওর মা ছিল,
ও ফোন বের করে কিছু একটা করে লজ্জা লজ্জা ভাবটা ঢাকার চেস্টা করছিল।
মিনিট দশেক বোধহয় হবে, নাটক শেষ হল। আকিবের ঠোটে
তখনও বাঁশি। মেয়েটা চলে যাচ্ছিল, বলা বাহুল্য পিছনে একটু
আধটু চাহনি আকিবের বুকে হয়তো কাপন তুলেছিল বটে। তারপর বাঁশি খ্যান্ত দিয়ে আকিব
মোবাইল খুলে দেখলো ফেসবুকে বার্তা এসেছে, স্রেফ দুটি শব্দ!
যার মধ্যে অনেক বেদনার কর্ণকুহর , আবেগ আর রোমান্টিসিজমের
উপাদান লুকিয়ে আছে।
"বাজান... বাজান।"
এরপরে ফিজিক্স
অলিম্পিয়াডের আগের দিন ,
রাত ১০ টায় আরিশার অ্যাডমিট কার্ড প্রিন্ট করে দিয়ে আমি কিভাবে
আকিবের বিশেষ বিশেষনযুক্ত ভাই থেকে শুধু 'ভাই' হয়ে গেলাম, তা আরেক গল্প।
৮।
গতকাল রাত ৮ টার দিকে আমরা
মৃন্ময়ের হোস্টেলের ছাঁদে ছিলাম। বুর্জোয়া শাসন থেকে অরায়ন, নাগরিক বৈদগ্ধতার উৎস আলোচনা, প্লেইডাস সব আলোচনা চলছিল।
পৌষের শীতল হাওয়া, আর আমার চোখের দৃষ্টি কেড়ে নেওয়ার মত একটা নির্লজ্জ হলুদ চাঁদ।
আমার হটাৎ হিসেব করতে মন চাইল, ছোটোখাট
হিসেব। সময় আর মানুষের হিসেব।
গত কয়েক সপ্তাহে আমাদের
রুটিন হয়ে গেছিল বিকালে 'গাজী পিঠাঘর' এর বুফে, মৃন্ময়ের
ভাঙ্গা বেডের উপরে ভয়াবহ আড্ডা (ভাঙ্গা বেডের জন্য আকিব-ই দায়ী ,) আরামবাগের রাস্তায় বীভৎস সঙ্গীত, সন্ধ্যায়
আকিবের বাসায় আপুর রান্না (আর কফি) নাস্তা, ওঁর রুমের ভেতরে
গল্প; এসব চোখে ভাসছিল।
এর মাঝে ওঁর বাসার যায়গাটা
পর্যন্ত আমাদের প্রিয় হয়ে গেছিল।
৯।
এস এস সি পরীক্ষার পর আমার
জীবনে একটা এধরনের (আসন্ন) পরিবর্তন এসেছিল।
আর একটা আসছে।
এইচ এস সি পরীক্ষা শেষ
হবে। আমি আর মৃন্ময় বাইরে কোথাও অ্যাপ্লাই করব সামনের বার, আকিব অ্যাপ্লাই করেছে এবারই ,
এপ্রিল নাগাদ দিয়ে দিবে ফলাফল। সব ঠিকঠাক থাকলে সেপ্টেম্বরে ও দেশের
বাইরে চলে যাবে।আর কিছু আপাতত ভাবতে চাইনা।
ওরা গতকাল বাসা পরিবর্তন
করেছে, ধানমণ্ডির
দিকে গেছে । আকিব, আমি ও মৃন্ময় গতকাল অনেকদিন পর কলেজে গিয়েছিলাম। কলেজের বিদায়
অনুষ্ঠান ছিল। বিপ্লবের আলোচনা বুর্জোয়া নিপাত-
সবই হল। আমার স্মৃতিগুলো শুধু ফ্লাশব্যাক করছিল।
টিফিনে আমার ‘চ্যাগানো,’ ওঁর
বক্তৃতা, মাঠের হাটাহাটী, ফুটবল, দৈত্যাকার গাছগুলো... এরকম অনেককিছু।
এসব আবারো হবে, অবশ্যই হবে। আরামবাগের মোড় থেকে ম্যাসাচুসেটসের কাফে, যেকোনোখানে।
শুধু মনের ভেতরে একটু
আশঙ্কা ।
যদি কিছু ভুল হয়ে যায়?
যেদিন পড়ালেখার জন্য
বুর্জোয়াদের দেশে যাবি সেদিনও আরেকটা কিছু লিখব।
যেদিন অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে
একটা কালজয়ী আবিষ্কার করবি সেদিনও লিখতে হতে পারে।
কিংবা , আরিশা যেদিন তোকে ‘আপনি’
বাদে তুমি করে বলবে , সেদিনও!
এর মাঝে মৃন্ময় আর বাকিরাও
গল্প হয়ে যাবে নিশ্চয়ই।
এতো এতো মেটাফোর আর ফিগার ওফ স্পিচের দিয়ে "আকিব" নামের ছেলেটাকে বর্ণের মাঝে বেধে রাখার প্রচেষ্টা!
ReplyDeleteওরে! ও যে দড়িছেড়া বৃষ! ওকে বেঁধে রাখে তা কার সাধ্য!
আজ প্রোলেতারিয়েত বলে -_-
Deleteসকলেই বলছে। আর আমি নীরব শ্রোতা ।
Deleteদাদা একদিন আমারও টাইপ করার সময় হবে;সেদিন খেলা হবে
ReplyDeleteবিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক!
পুঁজিবাদীর কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও!
শালা -_-
Deleteমজা তো, আমাদের গুষ্ঠীর সবারই দেখি একই অবস্থা! that was sweet <3
ReplyDelete