মেঘ থমথম করে । অর্বাচীন কথা
ক’দিন ধরে লুপে শুনছি ভূপেন হাজারিকার গান মেঘ থমথম করে। অনেকদিন পর হঠাৎ করে খুঁজে পাওয়া একটা গান যখন বার বার শুনতে ইচ্ছা করে তখন ভালো লাগে, অনেক বেশি ভালো লাগে।
মেঘ থম থম করে কেউ নেই নেইজল থৈ থৈ করে কিছু নেই নেইভাঙ্গনের যে নেই পারাপারতুমি আমি সব একাকার।।
এই একটা বছর কি বিপদেই না পড়া গেল! সারাজীবন সময় খুঁজে পাওয়া গেলনা, আর এবার যখন অফুরান সময়, কি দেখবো, কি শুনবো খুঁজে পাইনা!
কি কষ্ট করে এক একটা সিনেমা দেখবো বলে বের করেছি সারা জীবন। অবশ্য, কাজে দিয়েছে এই গরু খোঁজা, আজ পর্যন্ত যত কিছু দেখেছি, এক দুই ব্যতিক্রম ছাড়া কিছুই নিরাশ করেনি। মহৎ শিল্পের ঝংকারে, আবেদনে, তীব্র হাহাকারে পূর্ণ হয়েছে হৃদয় বারংবার। কিন্তু এই অসাধারণ অনুভূতি আর ভালোলাগাটাই আবার ক্ষতিটা করে দিয়েছে! সাধারণ কিছু দেখতে, শুনতে, পড়তে আর ইচ্ছা করেনা।
একটা তুলনামূলক খারাপ সিনেমা দেখার থেকে যেন তাঁর দ্বিগুণ সময় একটা ভালো সিনেমা খোঁজা ভালো! আর যেসব কিছু ভালো লাগে, তা যেন সবসময় দেখি, মন খারাপ থাকলে শুধু মনে করলেই চলে যে এটা সেই পৃথিবী, যেখানে পিঙ্ক ফ্লয়েড বানিয়েছে Atom Heart Mother, এখানেই শুনেছি অর্ণব, ওয়ারফেজের বেওয়ারিশ, পড়েছি টু কিল আ মকিংবার্ড, দেখেছি Shindler’s List, বারবার দেখি Eternal Sunshine on the spotless mind, বারবার খুঁজি Tangerine কে!
মানুষও মন ভালো করে, স্যাল খানকে দেখলে ভাল লাগে, গুরুদেবের কথা মনে করে ভালো হয় মন। চিন্তা করি রেজা স্যার বা হাফিজুর রহমান স্যার কিংবা জহরলাল স্যারের মত দেবতুল্য শিক্ষকদের, কিংবা পঞ্চগড়ের ‘সহজ মানুষ’ সেই কৃষকের কথা, অথবা নেহাত-ই আমার সদা চঞ্চল ইনোসেন্ট ছোট্ট বোনের কথা।
পৃথিবী সুন্দর, অবিশ্বাস্য সুন্দর! কিন্তু এটাই বেঁচে থাকার একমাত্র রূপ নয়। জীবন কখনো শুকায়ে যায়, কখনো খরা আর কখনো ঝড়ে হয় বিদ্ধস্ত! জীবনের বহুমাত্রিকতা এর সবথেকে আকর্ষনীয় দিকগুলোর একটা। একই চোখ দিয়ে দেখা একটা বিল্ডিং কয়েক মিটার ব্যবধানে ঘটতে পারে একশো আশি ডিগ্রী বিপরীত ঘটনা। একই সময় কেউ যখন আনন্দে উদ্বেলিত, তখন আরেক প্রান্তে কারো জীবন ছেয়ে যায় বিষাদে।
![]() |
(Image source unknown) |
মধ্যরাতে যখন কেউ পুরোদস্তর আনন্দে ডেব্রেসেনের সোডিয়াম আলো ভেজা রাস্তায়, হিমেল হাওয়ার বসন্তের বাতাসে নক্ষত্ররাজির রূপে মুগ্ধ হয়, তখন হয়তো আতঙ্কে আর দুঃখে কালো বাংলাদেশের লাখো মানুষ।
মানুষ কখনো কখনো চেষ্টা করে নিজের এই প্রিভিলেজ টুকু কমপেনসেট করতে! তারা দায়বদ্ধতা মোছার চেষ্টা করে ফেসবুকে দেয়া খাবারের ছবিকে গালি দিয়ে, কারন অনেকেই না খেয়ে আছে, কেউ হয়তো শুধু তাঁর প্রিভিলেজ টুকু অ্যাকনলেজ করেই এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু সারাজীবন কত দেখেছি, প্রিয় বন্ধুর তীব্রতম শোকে ক্ষণিকের ভদ্রতাটুকু করেই মানুষ তার স্বীয় কর্মে নিমজ্জিত হয়। অনেক চিন্তা করে দেখেছি, এই হল নিয়ম, কিচ্ছু করার নেই, এটাই মানবজনমের নিয়তি! মুভ অন… নয়তো ডুবে যাও কালের অতল গহ্বরে।
নোবডি রিয়েলি গিভস অ্যা ফাক!
জানেই তো সবাই, এককালের কত অপরিহার্য মানুষ এখন শুয়ে আছে কবরে! সবই চলছে!
তাই আসলে এখন ব্যক্তিগত সুখ উপভোগ করাতে কোন দোষ দেখিনা। দেখুক কেউ নেটফ্লিক্স, যখন পাশে কেউ না খেয়ে আছে! একটা জীবন, সংগ্রাম করে কাটাতে হবে এমন কেন? যার ইচ্ছা হয় সংগ্রাম করুক, যার ইচ্ছা হয় নষ্ট করুক, বেস্ট লাইফ এর সংজ্ঞা যেখানে কেউ দিয়ে যায়নি কোথাও!
এবং এখানে চলে আসে পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের কথা! যুক্তিতর্ক দিয়ে দেখানো যায় হয়তো, এই ক্যাপিটালিস্ট নেটফ্লিক্স কীভাবে পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট! কিন্তু এই একমাত্র মানবজীবন কি পলিটিক্যালি কারেক্ট হওয়া ওর্থ করে?
![]() |
A scene from the film Parasite (2019) |
আমি আসলে বলতে চাই, বৃষ্টিতে উপচে পড়া সুয়ারেজ পানিতে ভিজে আমার জ্বর বেধেছিল, বড় কষ্ট হয়েছিল, জানি! জানি, ঝড়ে বাড়ি উড়ে যাওয়া মানুষটার কথা। কিন্তু, তবুও বলতে চাই, বৃষ্টি সুন্দর, সুন্দর কালবৈশাখী ঝড়ের কালো মেঘ! একটা দুঃখ আরেকটা সুন্দরের সৌন্দর্যকে বিলীন করে দেয়না! বরং, মূল আলাপটা থেকেই আসলে দূরে চলে যাই আমরা। ঐ লোকটারও তো অধিকার থাকা উচিত এই বৃষ্টি শেষের নীল আকাশ উপভোগ করার, কেন তাঁকে বৃষ্টি হলে ঘরের কথা ভাবতে হবে! কারো কি দায় আছে এজন্য?
অন্যদিকে, পলিটিক্যাল কারেক্টনেস কী আমাদের ইনোসেন্স নষ্ট করে নাই? আমরা কী নিজেরে হারায়ে ফেলিনাই পলিটিক্যালি কারেক্ট বানাতে গিয়ে? এখন কোন বন্ধুর সাথে, কারো সাথেই, প্রাণখুলে কথা বলা যায়না। কতকিছু সেন্সর করতে হয় দু’টো কথা বলতে গিয়ে! এসব কিছু কি ওর্থ করে?
আমার মনে হয়না! কারন আমি অনেক দেখেছি, শুনেছি, দিনশেষে মানুষ সহজ মানুষের ঐ সহজ হৃদয়টাই চায়। সেখানেই শান্তি। কিন্তু শান্তিই কি সুখ? সুখ-ই কি তবে আমাদের চাওয়া?
যদি তাই হয়, কীভাবে হবে সব? আমরা কি জানিনা, সুখ এবং শান্তির সাথে প্রগতি একসাথে চলতে পারেনা! সুখে থেকে পৃথিবীর কোন মহৎ কাজটা হয়েছে? কিছুই হয়নি!
মনে হয়, যেন সবকিছু জেনে বুঝেই আমরা একটা অবধারিত নিয়তির দিকে আগাচ্ছি, যেখানে আমরা বেঁচে থাকবো শুধুমাত্র আরেকজনের চোখে একজন আদর্শ মানুষ হতে গিয়ে, আরেকজন কে খুশি করতে গিয়ে! এই সামান্য লেখার জন্য আমাকে ভাবতে হচ্ছে, না ভাবতে চাইলেও চলে আসছে, এতটুকু লেখা কে কীভাবে পড়বে। কী লিখলে, আরো দু’জনের প্রশংসা পাওয়া যাবে। আবার ভাবি, দুটো প্রশংসার জন্যই তো শেষমেশ মানুষ লেখে, তাই নয় কী?
নিজের শান্তির জন্য লিখি, এটা কি একরকম নিজেকে মিথ্যা বলা নয়? নিজের জন্য লিখলে সেটা তো আর এখানে প্রকাশ করার কথা ছিলনা। থাকতো কোন এক গোপন খাতায়!
When I was a kid, I wanted to change the world.
Now, I am neither a String theorist, nor I am Sheldon, but I hate CHANGE.
Not because I am afraid to step out of my comfort zone, but because I find most of the CHANGEs to be a waste of energy and resources. The world, this capitalist greedy & speedy world, preaches the mantra—our resources on earth are limited, so we need to look for other options, we need competition—but let me tell you, if you think well, you will see, resources have never been the problem, it was always the management!
But well, my words don’t help at all! Because I know well, CHANGE is all—that is constant!
And let me repeat, I hate change...
Comments
Post a Comment